ব্যাটারি অপটিমাইজেশন কি ( বিস্তারিত তথ্য )

A

A ব্যাটারি অপটিমাইজেশন এই কথাটি আপনি কখনো শুনে থাকতে পারেন তবে মনে হতে পারে এটি কি কারণে আবিষ্কার হয়েছে এবং এর অর্থই বা কি সংক্ষিপ্তভাবে বললে এটি হল এক ধরনের প্রযুক্তি যেটির মাধ্যমে আপনার ডিভাইসের ব্যাটারিতে প্রদর্শন করতে এবং তার শক্তিকে সাশ্রয় করতে ব্যবহার করা হয় চলুন আমরা এ বিষয়ে বিস্তারিত জানি।


ব্যাটারি অপটিমাইজেশন কি

ব্যাটারি অপটিমাইজেশনের ব্যবহারের মূল কারণ ও বিস্তারিত আলোচনা:

A আমরা যদি পিছনের দিকে তাকায় আজ থেকে  কিছু বছর আগে সে সময় বিভিন্ন ডিভাইসের মধ্যে ব্যাটারির ব্যবহার ছিল। তখন বেশ কিছু সমস্যা লক্ষ্য করার মত ছিল যেমন ব্যাটারির ব্যাকআপ খুব অল্প সময়ের মধ্যে কমে যেত, ব্যাটারির শক্তি খুব তাড়াতাড়ি খরচ হতো, এছাড়াও ব্যাটারি দীর্ঘ সময় চলতো না । ব্যাটারি ঠিকমত তা শক্তি ধরে রাখতে পারতো না এছাড়া ব্যাটারি অল্প সময়ের মধ্যে ফুলে যাওয়া আরো বিভিন্ন রকমের সমস্যা দেখা দিত।

 A তাই এইসব সমস্যা কাটিয়ে কিভাবে আর এক ধাপ উপরে ব্যাটারিকে আরো উন্নত করা যায় এসব চিন্তা-ভাবনা ও পরিকল্পনার ফলশ্রুতি হিসাবে এক নতুন ধরনের টেকনোলজির সন্ধান করা হলো যেটি হল ব্যাটারি অপটিমাইজেশন। এটি আধুনিক বিজ্ঞানের একটি নব উদ্ভাবন যা ব্যাটারিকে আরো উন্নত করতে সাহায্য করে থাকে।

ব্যাটারি অপ্টিমাইজেশন কিভাবে কাজ করে থাকে:

ব্যাটারি অপ্টিমাইজেশন কিভাবে কাজ করে থাকে

 A এই সিস্টেমটি ব্যবহার করার জন্য বিভিন্ন রকম পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়ে থাকে। এই পদ্ধতি ব্যবহার করে ব্যাটারির বিভিন্ন গতিবিধি সম্পর্কে নজর রাখা হয় এবং ব্যাটারির কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করা হয় এবং লম্বা সময় ধরে ব্যাটারিকে সুস্থ রাখতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। এর জন্য বেশ কিছু পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়ে থাকে সেগুলি হল---

বিশেষ এপ্লিকেশন বা সফটওয়্যার এর ব্যবহার

 এর জন্য বিশেষ কিছু সফটওয়্যার তৈরি করা হয়েছে যে গুলির সাহায্যে ব্যাটারির বিভিন্ন গতি বৃদ্ধি নজর রাখা হয় বা মনিটরিং করা হয়। এই এপ্লিকেশনগুলি ব্যবহারের মাধ্যমে ব্যাটারির মধ্যে হতে থাকা বিভিন্ন কার্যকলাপ রেকর্ড করা হয়ে থাকে কোনরকম সমস্যা হলে সেটি সহজে ধরা যায় এতে ব্যবহারকারীর ব্যাটারি ব্যবহার করার সম্বন্ধে অভিজ্ঞতা বৃদ্ধি হতে থাকে।

ডিভাইসে স্ক্রিন সেটিং এ এর ব্যবহার:

 ডিভাইসের স্ক্রিনের উজ্জ্বলতা বাড়ানো কমানো বা মোবাইলের স্ক্রিন লক করতে এটি ব্যবহার করা হয় যাতে অতিরিক্ত ব্যাটারির চার্জ বাঁচানো যায়।

নেটওয়ার্ক সেটিংস নির্ধারণ করতে এর ব্যবহার:

 ডিভাইসের মধ্যে থাকা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ নেটওয়ার্ক যেমন bluetooth, wi-fi ,ইন্টারনেট ডাটা ও GPS এর সঠিক ব্যবহার করতে এইসব উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করা যাতে ব্যাটারির অতিরিক্ত চার্জ নষ্ট না হয় এবং ব্যাটারির উপর কোনরকম চাপ সৃষ্টি না হয় ।

অ্যাপ্লিকেশন ম্যানেজমেন্ট করতে এর ব্যবহার:

অনেক সময় আমরা অপ্রয়োজনীয় অ্যাপস আমাদের ডিভাইসের মধ্যে ব্যবহার করি এবং এগুলি ব্যাকগ্রাউন্ডে চলতে থাকে এবং এতে ব্যাটারির অতিরিক্ত শক্তি অপ্রয়োজনে নষ্ট হতে থাকে । যাতে এইরকম অবস্থার সৃষ্টি না হয় সেই কারণেও এর ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

ব্যাটারি সংরক্ষণ বা ব্যাটারি সেভিং মোড:

 আমরা সকলেই জানি যে একটি ডিভাইসের ভেতরে নানা রকমের অ্যাপ্লিকেশন বা সফটওয়্যার ইনস্টল থাকে এবং সেগুলি ব্যবহার করার সাথে সাথে নির্দিষ্ট ব্যাটারির শক্তি ব্যবহার করে থাকে তাই এই ব্যাটারির শক্তিকে যাতে অ্যাপ্লিকেশনগুলি আর ব্যবহার না করতে পারে বা খুব অল্প ব্যবহার করে সেই জন্য এই ব্যাটারি সংরক্ষণ বা সেভিংস মোডের ব্যবহার করা হয় ।এটি ব্যাটারি অপটিমাইজেশনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ বলে বিবেচিত হয়।

হার্ডওয়্যার অপ্টিমাইজেশন: 

কিছু ডিভাইসে মধ্যে ব্যাটারির ক্ষমতা জন্য হার্ডওয়্যার পরিবর্তন করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, আমরা বলতে পারি যে- নতুন ব্যাটারি প্যাক বা শ্রেণীর ব্যাটারি ব্যবহার করার মাধ্যমে পূর্বের তুলনায় বেশি ব্যাটারি প্রদর্শন অথবা ব্যাটারি ব্যাকআপ দেয়।

কোন কোন ডিভাইসের মধ্যে ব্যাটারি অপটিমাইজেশন ব্যবহার করা হয়ে থাকে?

বর্তমানে  বিভিন্ন ডিভাইসের  মধ্যে  এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয় যেমন - মোবাইল, ল্যাপটপ, ট্যাবলেট, স্মার্টওয়াচ  সহ অন্যান্য  আধুনিক ইলেকট্রনিক  ডিভাইসগুলির মধ্যে ব্যাটারি অপটিমাইজেশন ব্যবহার  লক্ষ্য করা যায়। 

ব্যাটারি অপটিমাইজেশন এর সুবিধা:

ব্যাটারি অপটিমাইজেশন এর সুবিধা

 উপরের আলোচনা থেকে আমরা ব্যাটারি অপটিমাইজেশন -এর বেশ কিছু উপকারিতা সম্বন্ধে ধারণা পেরেছি। তবে এর সুবিধা সম্বন্ধে বিস্তারিত আলোচনা করব। কি কারনে ব্যাটারি অপটিমাইজেশন সিস্টেমটি ডিভাইসের মধ্যে ব্যবহার করা হয় এটি কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা আমরা এই  সমস্ত পয়েন্ট পড়লেই সহজেই বুঝতে পারব।

 ১. দীর্ঘদিন যাবত ব্যবহার : 

এই সিস্টেমটি ব্যবহার করার কারণে ব্যাটারির কার্যকলাপ মনিটরাইজ করা হয়।  ডিভাইসের মধ্যে থাকা বিভিন্ন সফটওয়্যার গতিবিধি লক্ষ্য করা হয় তাতে কোন ধরনের সমস্যা সহজেই ধরতে পারা যায় এবং সেগুলির সমাধান করা হয়। এতে ব্যাটারিটি দীর্ঘ সময় চলতে থাকে ।

২. ব্যাটারি জীবনকাল বাড়াতে সাহায্য করে: 

এই অপটিমাইজেশন পদ্ধতির কারণে ব্যাটারির চার্জ হওয়ার ধারণা পাওয়া যায় এবং চার্জের গতিবিধি লক্ষ্য করা যায়। যেসব কারণে ব্যাটারির জীবন নষ্ট হতে থাকে সেগুলি অপটিমাইজেশন পদ্ধতিতে বোঝা সম্ভব হয় এবং সেগুলিকে সমাধান করার মাধ্যমে ব্যাটারির জীবনকাল বাড়ে।

৩. ডিভাইস কর্মক্ষমতা এবং স্বাচ্ছন্দে ব্যবহার:

 প্রতিটা ইলেকট্রিক ডিভাইস চলে তড়িৎ শক্তির মাধ্যমে এবং এই শক্তি যদি কোন কারণে বাধা প্রাপ্ত হয় তাহলে ডিভাইসের কর্ম ক্ষমতা অচল হয়ে পড়ে বা এটি স্বাচ্ছন্দ্য ব্যবহার করা কঠিন হয়ে পড়ে।

এই অব্টিমাইজেশন পদ্ধতি ডিভাইসের মধ্যে ব্যবহার করার কারণে ব্যাটারির মধ্যে হওয়া বিভিন্ন সমস্যা গুলি সহজেই ধরতে পারা যায় এবং সেগুলি সমাধান করার কারণে ডিভাইসের মধ্যে পর্যাপ্ত তড়িৎ শক্তি সঠিকভাবে প্রবাহিত হয় এর ফলে ডিভাইস গুলির কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং ব্যবহারকারীর স্বাচ্ছন্দে ডিভাইসটি ব্যবহার করতে পারে। এইভাবে এই সিস্টেমটি ডিভাইসের কর্ম ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করে এবং ডিভাইস  ব্যবহারকারীকে সুন্দর একটি অনুভূতি দিয়ে থাকে।

৪. খরচ কমাতে সাহায্য করে:

এই পদ্ধতির কারণে দীর্ঘ সময় ধরে ব্যাটারি চলতে থাকে । অল্প সময়ের মধ্যে আপনার ব্যাটারি নষ্ট হয় না। এতে নতুন করে কোন ব্যাটারি আপনার ডিভাইসের জন্য কেনার প্রয়োজন পড়ে না। এইভাবে আপনার কমাতে সাহায্য করে থাকে।

৫. ব্যাটারি শক্তিকে বাঁচাতে সাহায্য করে:

আমাদের ডিভাইসের মধ্যে আমরা বিভিন্ন সফটওয়্যার ব্যবহার করে থাকি  এবং তাদের মধ্যে কিছু কিছু সফটওয়্যার এমন থাকে যারা অতিরিক্ত ব্যাটারির শক্তি ব্যবহার করে থাকে । এই  অপটিমাইজেশন পদ্ধতির মাধ্যমে সহজেই সেই সব সফটওয়্যারকে শনাক্ত  করতে পারি এবং  সেগুলিকে ডিভাইস থেকে  মুছে ফেলার মাধ্যমে ব্যাটারির শক্তিকে বাঁচানো হয়।

এছাড়াও ডিভাইসের ব্যাকগ্রাউন্ড চালু থাকা বিভিন্ন প্রকারের সফটওয়্যার গুলি শনাক্ত করে সেগুলোকে বন্ধ করে দেয়ার মাধ্যমে ব্যাটারি শক্তিকে বাঁচানো হয়ে থাকে ।

ইলেকট্রিক ডিভাইসের মধ্যে ব্যাটারির শক্তি কে ঠিকমতো ব্যবহার করতে সাহায্য করে এর ফলে ডিভাইস গুলির পারফরমেন্স ভালো থাকে এবং ব্যবহারকারী খুব সহজেই ডিভাইসগুলিকে অনায়াসে ব্যবহার করতে পারে।

আপনার স্মার্টফোন ডিভাইস এর মধ্যে ব্যাটারি অপটিমাইজেশন  [Battery Optimization] কিভাবে  অন (ON) করবেন:

 আপনি আপনার [ এন্ড্রয়েড ভার্সন 12 এর মধ্যে ]  স্মার্ট ফোনে ব্যাটারী অপটিমাইজেশন অপশনটি খুব সহজেই  অন করতে পারেন এর জন্য বেশ কিছু  স্টেপ অনুসরণ করতে হবে।

প্রথম স্টেপ:  প্রথমে আপনি আপনার মোবাইলের মেনু বারে ক্লিক করবেন তারপর সেটিং অপশনে ক্লিক করবেন।
mobile menu

দ্বিতীয় স্টেপ:  দ্বিতীয় স্টেপে আপনি  সেটিং এর সার্চ বাড়ে ক্লিক করবেন। আপনি সার্চ বারের মধ্যে ব্যাটারি অপটিমাইজেশন [Battery Optimization]  কথাটি লিখবেন।
setting search bar

তৃতীয় স্টেপ: এই অংশে আপনি ব্যাটারি অপটিমাইজেশনের  [Battery Optimization] দুটি অপশন দেখতে পাবেন।  স্পেশাল অ্যাপ এক্সপ্রেস [ special app access ]  এই অংশে ক্লিক করুন।

battery optimization

চতুর্থ স্টেপ: এখন আপনি দেখতে পাবেন সেটিং এর নিচে ব্যাটারি অপটিমাইজ  [Battery Optimization] অপশনটি  সেই  [Battery Optimization] টিতে আপনি ক্লিক করবেন।

battery optimization option

পাঁচ নম্বর  স্টেপ:  এখানে আপনি দেখতে পাবেন নট অপটিমাইজ [ Not optimization ]  অপশনটি এই অপশনটিতে আপনি ক্লিক করুন।

battery not  optimisation

৬ নম্বর স্টেপ:  এই অংশে আপনি অল অ্যাপস [ all apps ] অপশনটি সিলেক্ট করুন।

all app optimization
 সাত নম্বর স্টেপ:  তিন নম্বর স্টেপে ফিরে গেলে দেখবেন  নট অপটিমাইজ [ Not optimization ] অপশনের নিচের দিকে  রয়েছে অ্যাডভান্স সেটিং [ Advanced setting ]  অপশনটি সেই অপশনে ক্লিক করার মাধ্যমে আপনি অ্যাডভান্স ব্যাটারি অপটিমাইজেশন মধ্যে প্রবেশ করবেন এখানে আপনি ব্যাটারি অপটিমাইজেশনের সমস্ত সিস্টেম অন অথবা করতে পারবে।

advance battery optimisation

Conclusion / উপসংহার:

শেষ বেশ আমি এই কথাটা বলব যে তৎকালীন এই বিজ্ঞানের যুগে ব্যাটারি অপটিমাইজেশন একটি যুগান্তকারী আবিষ্কার ডিভাইসের জন্য এতে যেমন ব্যাটারির  শক্তির সাশ্রয় ঘটে এবং ব্যাটারি দীর্ঘ সময় ধরে বিনা কোন সমস্যায় চলতে থাকে এবং আপনার ডিভাইসকে স্মুথ ভাবে ব্যবহার করার অভিজ্ঞতা প্রদান করে।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url